করোনায় সংস্কৃতির করণীয় নিয়ে ১০৮ দেশের মন্ত্রীদের সভা

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কো'র আয়োজনে সদস্যভুক্ত দেশসমূহের সংস্কৃতি মন্ত্রীদের ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

৪৯৯

বৈশ্বিক মহামারির পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যমান স্বাস্থ্য সংকট ও সংস্কৃতি খাতে এর প্রভাব এবং করণীয়’ বিষয়ে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কো’র আয়োজনে সদস্যভুক্ত দেশসমূহের সংস্কৃতি মন্ত্রীদের ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (২২ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় এ সভা। এতে বাংলাদেশের পক্ষে অংশগ্রহণ করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। রাজধানীর বেইলি রোডের সরকারি বাসভবন মিনিস্টার্স অ্যাপার্টমেন্ট থেকে অনলাইন মিটিং অ্যাপ ‘জুম’ এর মাধ্যমে এ ভার্চুয়াল মিটিংয়ে যুক্ত হন তিনি।

- Advertisement -

ইউনেস্কো নির্ধারিত তিন মিনিটের নির্দিষ্ট বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশও করোনা মহামারিতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এর ফলে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম বর্তমানে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বিভিন্ন মেয়াদি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। সেখানে কর্মহীন, অস্বচ্ছল, প্রান্তিক শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমাদের মন্ত্রণালয়ও সংস্কৃতি খাতে কোভিড-১৯ এর প্রভাব হ্রাসকল্পে বিভিন্ন সময়োপযোগী উদ্যোগ ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে যা সংকট উত্তরকালীন সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণে সহায়তা করবে।

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ প্রসূত সংকট নিরসনে সংস্কৃতি খাতে অগ্রাধিকারমূলক যেসব প্রশমন কৌশল নেওয়া প্রয়োজন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- সংস্কৃতি খাতে এর প্রভাব নিরূপণ, ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে সব জাদুঘর ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগত স্থাপনা পরিদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণ, অস্বচ্ছল ও প্রান্তিক শিল্পীদের এককালীন অনুদানের ব্যবস্থা করা, সরকার কর্তৃক শিল্পীদের তৈরি মূল শিল্পকর্ম ক্রয় করা যাতে উভয়পক্ষ উপকৃত হয়, ভালো মানের রেকর্ডকৃত অনুষ্ঠান তৈরি করে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সম্প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠান প্রস্তুত করে বিভিন্ন ডিজিটাল মিডিয়ায় সম্প্রচার, জাদুঘর ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগত স্থাপনার জন্য বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া ইত্যাদি।

তিনি আরও বলেন, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পুনরুদ্ধার ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনতে জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন তা হল- ইউনেস্কো’র পক্ষ হতে জরুরি তহবিল দেওয়া, যার মাধ্যমে এ খাতের প্রভাব নিরূপণ ও ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীকে সহায়তার ব্যবস্থা করা যায়। আন্তর্জাতিকভাবে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে ইভেন্ট বা অনুষ্ঠান আয়োজন, অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে অধিক হারে সংস্কৃতি খাতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে পুনঃবিনিয়োগ ও পুনঃপরিদর্শন, ফলপ্রসূ আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংলাপের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিপূর্বক সংস্কৃতি খাতকে পুনরুদ্ধার করা, সরকার ও ইউনেস্কো প্রদত্ত অর্থনৈতিক প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে এ খাতে সহায়তা করা।

এসময় প্রতিমন্ত্রী সারাবিশ্বে করোনা ভাইরাসজনিত রোগে মৃত্যুবরণকারীদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা শিগগরিই এ মারাত্মক সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবো।

কেন্দ্রীয় ইউরোপীয় সময় বুধবার দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা (বাংলাদেশ সময় বুধবার বিকেল ৫টা হতে রাত ১০টা) পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে ইউনেস্কো’র সদস্যভুক্ত ১০৮ টি দেশের সংস্কৃতি মন্ত্রীরা অংশগ্রহণ করেন। ইউনেস্কো’র সংস্কৃতি বিষয়ক নির্বাহী অফিসের প্রধান মিস ডরিন ডুবোইস পাঁচ ঘণ্টার এ অনলাইন মিটিং পরিচালনা করেন।

এই বিভাগের আরও সংবাদ