জি এম মামুন নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা থেকে পিরোজপুর পর্যন্ত যমুনা খাল ভরাট করে তৈরি হচ্ছে কাঁচা রাস্তা। কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী প্রভাব খাটিয়ে নিজেই তৈরি করছেন ওই রাস্তা।
অনুসন্ধানে জানাযায়, উপজেলা চেয়ারম্যান নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্য মাটি ভরাট দিয়ে খাল দখল করে রাস্তা তৈরি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কাঁচা রাস্তা না থাকলেও অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মিয়ারাজ হোসেনের সহযোগিতায় হেয়ারিংবন্ড (ইটের) রাস্তা তৈরি করার জন্য সরকারি বাজেট নিয়েছেন। এজন্য ৫ কিলোমিটার যমুনার খাল দখল করে খালের মাটি দিয়ে তৈরি করছেন কাঁচা রাস্তা।
এছাড়া কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। (পিআইও) মিরাজ হোসেন বছর তিনেক আগে (গম দুর্নীতির কারণে) দুদকের মামলায় কালিগঞ্জ উপজেলা থেকে কয়েক দিনের জন্য উধাও হয়ে ছিলেন। রহস্যজনক কারণে উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মিরাজ হোসেন। (দুদকের গম কান্ড) থেকে মুক্তি পান। উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তা পিআইও মিরাজ হোসেন দীর্ঘদিন কালীগঞ্জ উপজেলায় চাকরির সুবাদে দুর্নীতি প্রধানমন্ত্রীর উপহার ভূমিহীনদের আশ্রয় কেন্দ্র আবাসন ঘরবাড়ি সহ আকাশ সোয়া দুর্নীতি যেন তার প্রতিদিনের সঙ্গী।
স্থানীয় আরিফুল, মহব্বত, মনিসহ অনেকে জানান, খাল খননের নামে সরকারের কয়েক লক্ষ টাকা লোপাট করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে উপজেলা চেয়ারম্যান।
খাল খননের জন্য ৫ লক্ষ টাকা সরকারি ভাবে বরাদ্দ নিয়েছেন তিনি। তবে খালের মাটি দিয়ে ৭ ফুট রাস্তা তৈরি করছেন। এছাড়া পাশের মাছের ঘেরের মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে রাস্তার কাজে।এতে করে খালের মাটি দিয়েই ভরাট হয়ে যাচ্ছে যমুনা খাল। মৌতলা থেকে পিরোজপুর পর্যন্ত খালের পাশ দিয়ে যে হেয়ারিং বন্ড রাস্তা তৈরির জন্য সরকারি বাজেট হয়েছে সেই টাকা লোপাট করাই মুল উদ্দেশ্য উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিয়ারাজ হোসেন। এসময় তারা প্রশ্ন করেন যেখানে কোন রাস্তা নেই সেখানে হেয়ারিং বন্ড রাস্তা তৈরির বাজেট কিভাবে দিলেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও)মিয়ারাজ হোসেন?।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে মৌতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফেরদাউস মোড়ল জানান,খাল খননের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ সরকারি অর্থ পেয়েছে ৩ লক্ষ ১৪ হাজার টাকা। তবে খাল খননের কাজ করছেন উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী বলে জানান তিনি।
খাল দখল করে রাস্তা নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার তন্ময় হালদার জানান,যমুনা খাল খননের বিষয়টি তিনি অবগতনন। বিষয়টি সম্পর্কে উপজেলা নিবার্হী অফিসার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবেন বলে জানান তিনি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিয়ারাজ হোসেন বলেন, মৌতলা থেকে পিরোজপুর পর্যন্ত খাল খননের জন্য ২ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। খাল খননের কাজ করছেন মৌতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফেরদাউস মোড়ল। খাল ভরাট করে রাস্তা তৈরি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওইখানে তো খাল দখল করে নিয়ে বসবাস করছে বহু পরিবার।অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন খালের মাটি দিয়ে বেড়িবাঁধ দেওয়া হচ্ছে রাস্তা তৈরি হচ্ছে না। এছাড়া কিভাবে হেয়ারিং বন্ডের রাস্তার অনুমোদন হয়েছে সে প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেননি। রাস্তা তৈরির জন্য সরকারি ভাবে কত টাকা বরাদ্দ সে বিষয়ে পরে জানাবেন বলে জানান তিনি।
এবিষয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার খন্দকার রবিউল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বিস্তারিত পরে আপনাকে জানাচ্ছি বলে মোবাইল ফোন কেটে দেন।
বিষয়টি জানার জন্য উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদীর কাছে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।