[জিম্বাবুয়ের মুফতি ড. ইসমাইল মেনক এ সময়ের অন্যতম প্রসিদ্ধ ইসলামী স্কলার। তিনি মদিনায় ইসলামের ওপর উচ্চতর পড়াশোনা এবং অলডারগেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সোশ্যাল গাইডেন্সের ওপর ডক্টরেট করেছেন। টুইটারে কোভিড-১৯ এর লকডাউনের সময় অনুশীলনের জন্য গিফট করা দু’টি বইয়ে জীবনাচরণের বিভিন্ন মৌলিক বিষয়ে তিনি সহজ সরল কিছু টিপস দিয়েছেন। লকডাউন গিফটের জীবন বদলানোর ষষ্ঠ আলোচনা হলোÑ আন্তরিকতা। এই পরিচ্ছেদের প্রথম অংশ আজ। অনুবাদ করেছেন মাসুমুর রহমান খলিলী।]
Ad by Valueimpression
আপনি যা কিছু করেন না কেন, প্রদর্শন করবেন না। আপনার উদ্দেশ্য পরিষ্কার করুন। এটি আপনার এবং সর্বশক্তিমানের মধ্যে রাখুন। যে কোনো ঔদ্ধত্য-অহঙ্কার এর সবকিছুকে অর্থহীন করে তুলতে পারে।
হে সর্বশক্তিমান, আমার অন্তরকে অহঙ্কার ও স্বার্থপরতা থেকে মুক্তি দিন। বিনম্রতা এবং চিন্তাশীলতা দিয়ে এটি পূরণ করুন। আমি যা কিছু করি সব সময়ই আপনাকে স্মরণ রাখতে আমাকে সহায়তা করুন।
যখন আপনার হৃদয় খাঁটি থাকে এবং আপনার উদ্দেশ্যগুলো হয় আন্তরিক, তখন সর্বশক্তিমানের কাছে আপনার জন্য সবকিছু সঠিকভাবে কাজ করছে তা করার উপায় থাকে।
আপনি শারীরিকভাবে সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর ব্যক্তি হতে পারেন তবে যদি আপনার হৃদয়ে হিংসাকে লালন করেন তবে আপনি অসুস্থ। এ থেকে মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত আপনি সর্বদা অসুস্থই থাকবেন!
বিশ্ব আপনার দৃশ্যমান উপস্থিতিকে বিচার করে। সর্বশক্তিমান বিচার করেন আপনার অন্তরকে। নিজেকে কখনোই অন্য কারো সাথে তুলনা করবেন না। আপনি বিশেষ একজন। কারণ তিনিই আপনাকে তৈরি করেছেন।
আপনি শুধু ভালো কাজ করেছেন বলেই এটি নিয়ে বড়াই করবেন না। সব সময় নম্র থাকুন। আপনাকে ভালো কাজের দিকে পরিচালিত করে আপনাকে অনুগ্রহ করার জন্য সর্বশক্তিমানকে ধন্যবাদ জানান।
আমাদের চার পাশে সব খারাপ ঘটনা চলতে থাকা সত্ত্বেও, সর্বদা আপনার মনে আশা রাখুন। দয়া এবং উদারতা যাই হোক না কেন, এটাই বাঁচার একমাত্র উপায়!
লোকেরা যখন আপনার সাথে অন্যায় আচরণ করে, তখন সত্যের মধ্যে সান্ত্বনা সন্ধান করুন। এটি আপনার হৃদয়ে গেঁথে রাখুন যে সর্বশক্তিমান সত্য জানেন। তাঁর দেখাই যথেষ্ট।
একবার আপনি একটি ভালো কাজ সম্পন্ন করার পরে, আরো এগিয়ে যান। যা করেছেন তা নিয়ে ভাববেন না বা কথা বলবেন না। মনোযোগ আকর্ষণ বা স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা করবেন না। তিনি অবশ্যই আপনাকে প্রকাশ্যেই পুরস্কৃত করবেন।
আপনি প্রকাশ্যে সমালোচনাকে ভয় পাবেন না; বিশেষত আন্তরিক উদ্দেশ্যের সাথে করা সর্বোচ্চ ইচ্ছার প্রকাশ ঘটা কাজে। তবে এমন প্রশংসাকে ভয় করুন যা আপনাকে অহঙ্কারী করে তোলে।
দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছা থেকে বিরত থাকুন। সর্বদা ভালোটি অনুমান করুন। আমরা সবাই জীবন নামের অভিন্ন যাত্রায় আছি, তবে আমাদের পদ্ধতি আলাদা। দয়াশীল হন!
কোনো কিছুর প্রত্যাশা না করেই দেখুন কতটা সুন্দরভাবে ভালোটি করা সম্ভব হয়েছে। তাদের কথা স্মরণ করুন যারা আপনার প্রার্থনায় সাহায্য করেছেন এবং তাঁর কাছে আপনার মঙ্গল কামনা করেছেন। এরপর চলতে থাকুন।
বসন্ত আপনার মনকে প্রায়ই প্রশান্ত করে, এতে আচ্ছন্ন করে থাকা মেঘের আড়াল থেকে আপনি মুক্তি চান। যাতে আপনি আরো বৃহত্তর স্পষ্টতা এবং প্রজ্ঞা নিয়ে সব কিছু দেখতে সক্ষম হন।
অন্যকে মুগ্ধ করার জন্য আপনার জীবনযাপন করবেন না। আমরা আজ সামাজিক প্লাটফর্মগুলোতে প্রত্যেকে একে অপরকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে দেখতে পাই। আপনি নিজের মতো হন।
আজ, আমরা অধিকতর স্বার্থপর হয়ে উঠছি। এটি প্রায়ই আমাদের সম্পর্কে প্রভাব ফেলে। সাহায্যের হাত বাড়াতে শিখুন, অন্য কাউকে তুলে আনুন। দরদি হন। করুণাময় হন।
হে পরাক্রমশালী। এই দিনে আমি যে সংগ্রামের মুখোমুখি হচ্ছি তার মোকাবেলার জন্য আমাকে শক্তি দিন। যখন আমি হাল ছেড়ে দিতে প্রলুব্ধ হই তখন আমাকে চালিয়ে যেতে সাহায্য করুন এবং যা করা দরকার তা করার সাহস দিন।
জিহ্বা হৃদয়ে যা আছে তার প্রকাশ ঘটায়। সুতরাং হিংসা, ঘৃণা, কুৎসা ও সন্দেহ থেকে আপনার হৃদয় মুক্ত করুন। খাঁটি হৃদয় থেকে উৎসারিত হলে আপনার বক্তব্য হবে সদয়।
আপনি যখন দেখেন যে প্রত্যাশার তুলনায় লোকেরা ‘কম ধার্মিক’, তখন কঠোর হবেন না এবং তাদের বিচার করতে যাবেন না। তারা সম্ভবত সংগ্রাম করছে অথবা তাদের গাইডেন্সের প্রয়োজন।
একই সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি হিসেবে অন্য লোকদের সাথে মর্যাদা ও দয়ার আচরণ করুন। আপনার জীবন এতে ইতিবাচকতাকে আকৃষ্ট করবে, উপভোগ করবে সর্বশক্তিমানের সন্তোষ।
এরপর কাল : জীবন বদলানোর টিপস :